সংবাদ প্রকাশের পর রামুর শীর্ষ ইয়াবা ডন সাইদুল হোসেনকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রামুর চাকমারকুলের ডেইঙ্গাপাড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
কক্সবাজার জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলন করে তাকে গ্রেফতারে বিস্তারিত জানানো হবে।
একটি ইয়াবা মামলায় সাইদুল হোসেন তার পরিবর্তে শাহাজাহান নামের এক ব্যক্তিকে টাকার বিনিময় জেলে পাঠিয়েছেন। আর তিনি নিজে এলাকায় বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছেন-এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার ৬ এপ্রিল যুগান্তরে কক্সবাজারের ইয়াবা ডন সাইদুলের আয়নাবাজি শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। পরে শুক্রবার দুপুরে পুলিশ সাইদুল হোসেনকে গ্রেফতার করে। জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে সাইদুল ইয়াবার বড় বড় চালান পার করছেন। বিভিন্ন সময় তার ইয়াবার চালান নিয়ে ১৩ মাদক বহনকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে গেলেও সাইদুল থেকে যান পর্দার আড়ালে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তার। সর্বশেষ গ্রেফতার সাইমনের জবানবন্দিতে ফেঁসে যান সাইদুল। এসব বিষয়ে জানতে রামুর চাকমারকুলে সাইদুলের মুখোমুখি হয় যুগান্তর। এ সময় তিনি অভিযোগ স্বীকার করে সংবাদ না করার জন্য প্রতিবেদককে আর্থিক সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব দেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৭ জুলাই রাতে রামু উপজেলার মরিচ্যা যৌথ চেকপোস্টে বিজিবির হাতে ১৯ হাজার ৬৫০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার হন চাকমারকুল ইউনিয়নের পশ্চিম ৯নং ওয়ার্ডের মৃত মকতুল হোসেনের ছেলে সাইমন।
ওই রাতেই সাইমনকে আসামি করে মামলা করেন ৩০ বিজিবির হাবিলদার খলিলুর রহমান। সাইমনকে দুদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সাইমনের জবানবন্দি অনুযায়ী সাইদুলকে মামলার ২ নম্বর আসামি করা হয়। এছাড়া সদরের খরুলিয়া ঝিলংজা ডেইঙ্গাপাড়ার রশিদ আহামদের ছেলে আমিনকে ৩ নম্বর আসামি করে ৩১ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
অভিযোগ রয়েছে, কোটি টাকার বিনিময়ে থানা পুলিশ ও আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে আদালতের সঙ্গে প্রতারণা করে তার বদলি আসামি হিসাবে শাহাজাহানকে আত্মসমর্পণ করিয়েছেন সাইদুল। অন্যদিকে টাকার বিনিময়ে এতে সহযোগিতা করেন কক্সবাজার জেলা জজ কোর্টের আইনজীবী নজিবুল আলম নজীব। তবে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে যুগান্তরকে বলেন, অন্য সব আসামির মতো শাহাজাহানও আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। তার কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র চাইলে তিনি তা দেখান। জাতীয় পরিচয়পত্রে ছবি পরিবর্তনের বিষয়টি তিনি জানতেন না বলে জানান।
পাঠকের মতামত